সিনিয়র মামাতো বোন – পর্ব 05

রিয়াদ চৌধুরীঃ

কি আর করার এর সাথে তর্ক করে কোনো লাভ নেই।কলেজ চলে আসার পর দুজনে ভিতরে ঢুকে অনিত্রাকে ক্লাসে পাঠিয়ে দিলাম।আর আমি আড্ডা দিতে চলে গেলাম।তারপর ক্লাস শুরু হওয়ার আগে ক্লাসে গেলাম।

সব ক্লাস শেষ করে বের হয়ে আবার আড্ডা দিতে লাগলাম।

তারপর অনিত্রা আসার পর বাসায় চলে গেলাম।এইভাবে আমাদের দিন কাল চলতে লাগলো।অনিত্রা আর আমার ভালোবাসা দিন দিন বেড়েই চলেছে।আর এর মধ্যে আমাদের পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো।তারপর আমরা ২ জনে ভালো একটা ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম।

রাতে খাবার টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছি ওই সময় বাবা বললো,,,,

বাবা : অনিত্রা কালকে তোমার ভাইয়া আর ভাবী দেশে ফিরছেন।

অনিত্রা : কি আপনি সত্যিই বলছেন আঙ্কেল।(অনেক খুশি হয়ে।)

বাবা : হ্যাঁ কালকে বিকেলের ফ্লাইটে আসছেন তারা।তুমি আর রিয়াদ তাদের বাসায় নিয়ে এসো।

অনিত্রা : আচ্ছা।

তারপর খাবার খেয়ে আমি রুমে শুয়ে আছি তখন অনিত্রা আমার রুমে আসলো।এসে আমার কোলে মাথা রাখলো।

আমি : আজকে অনেক খুশি লাগছে ম্যাডামকে।

অনিত্রা : হ্যাঁ অনেক খুশি আজকে আমি।শুনলে না আঙ্কেল কি বললো।আমার না আর সইছে না।কখন যে রাতটা পার হবে।

আমি : আমি তো জানি তুমি অনেক খুশি।আর তোমাকে খুশি দেখে আমিও অনেক খুশি।(তাকে জড়িয়ে ধরলাম।)

অনিত্রা : আচ্ছা রিয়াদ আমরা বিয়ে কবে করবো।

আমি : এই কি বলো।আমরা তো এখনও অনেক ছোট।আর আমিতো কোনো কাজও করি না।

অনিত্রা : তাতে কি হয়েছে।আমি তোমাকে এখনই বিয়ে করতে চাই।

আমি : পাগল হয়ে গেলে নাকি।আগে আমাদের পড়া লেখা শেষ হয়ে নেক তারপর সবাইকে আমাদের ব্যাপারে বলবো।

অনিত্রা : না আমিতো কালকেই আম্মুকে তোমার ব্যাপারে বলবো।

আমি : তাহলে আমি তোমার সাথে আর কথা বলবো না।(একটু রাগ করে।)

অনিত্রা : আচ্ছা আচ্ছা বলবো না।তাও আমার সাথে রাগ করো না।তুমি রাগ করলে আমার খুব কষ্ট হয়।

আমি : তাহলে প্রমিস করো এখন কাউকে আমাদের ব্যাপারে কিছু বলবে না।

অনিত্রা : আচ্ছা প্রমিস।

আমি : এখন তোমার রুমে গিয়ে শুয়ে পর।নাহলে কেউ দেখে ফেলবে।

অনিত্রা : নাহ আগে একটা কিস দাও আমাকে।নাহলে আমি যাবো না।

আমি : তুমি অনেক দুষ্ট হয়ে গেছ।আচ্ছা কাছে আসো।

অনিত্রার কপালে একটা ছোটো করে কিস করে দিলাম।)এখন যাও।

অনিত্রা : যাচ্ছি তো।এইভাবে তাড়িয়ে দিচ্ছ কেন।আর কিছুদিন পরে তো এইটা আমারই ঘর হবে।

আমি : আচ্ছা যখন হবে তখন দেখা যাবে।এখন যাও আমিও ঘুমাই।

অনিত্রা : আচ্ছা ।

তারপর অনিত্রা চলে গেলো।আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।সকালে ঘুম মধ্যে চেহারায় নরম কিছু স্পর্শ পাচ্ছি।আসতে আসতে চোখ খুলে দেখি অনিত্রা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।আমি আস্তে আস্তে চোখ খুলতে দেখে বললো,,,

অনিত্রা : এইযে জনাব ঘুম হলো আপনার।

আমি : তুমি আর ঘুমাতে দিলা নাকি ।(ঘুম ঘুম চোখে।)

অনিত্রা : কেন আমি আবার কি করলাম।

আমি : এইযে সকাল সকাল এসে আমার ঘুমটা নষ্ট করল।

অনিত্রা : কি আমি তোমার ঘুম নষ্ট করেছি।দাড়াও দেখাচ্ছি তোমাকে মজা।(এইটা বলে আমার উপর উঠে আমাকে কিল ঘুসি মারতে লাগলো।)

আমি : আরে আরে মর যাবো তো।

অনিত্রা : তোমাকে আজ মেরেই ফেলবো।(বলে আবার কিল ঘুসি দিতে লাগলো।আমি আর না পেরে অনিত্রাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে তার উপর উঠে বসলাম।)

আমি : এখন কে বাঁচাবে তোমাকে।

অনিত্রা : একবার ছেরে দক্ষ তোমার কি অবস্থা করি।

আমি : ও তাই নাকি।তাহলে তো তোমাকে আর ছাড়ছি না।দেখি কি করতে পারি।

অনিত্রা : আরে ছোট পুফুআম্মু তুমি এখানে কি করছো।

আমি : আম্মু কোথায় আম্মু….(তাকে ছেরে দিয়ে দূরে সরে বসলাম।)

অনিত্রা : সেটা আমি কি করে জানবো।

আমি : তোমাকে তো আজকে….(সাথে সাথে দোর দিয়ে চলে গেলো।)

আমিও আর দাড়িয়ে না থেকে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে নাস্তা করতে চলে গেলাম।নাস্তা করার পর ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি ওই সময় আম্মু আমার রুমে আসলো।

আমি : কিছু বলবে আম্মু।

আম্মু : হ্যাঁ বলছিলাম যে কোথায় যাচ্ছিস।

আমি : কোথায় যাচ্ছি মানে।ভার্সিটি যাচ্ছি।কেন কিছু হয়েছে।

আম্মু : হ্যাঁ বলছিলাম যে আজকে আর কোথাও যেতে হবে না।বিকেলে তোর বড় মামাদের আনতে যেতে হবে।তাই আজকে বাসায় থাক।

আমি : কিন্তুু আম্মু বাসায় থেকে আমি কি করবো।বাসায় তো কোনো কাজ ও নেই যে করবো।

আম্মু : কে বলেছে কাজ নেই।এখন গিয়ে আগে বাজার করে নিয়ে আয়।

আমি : কি আমি বাজার করতে যাবো।

আম্মু : তো কি হয়েছে।

আমি : তুমি জানো না।আমি কোনো সময় বাজার করি নি।আর আমিতো জানি না বাজার কি ভাবে করতে হয়।

আম্মু : তোকে যেটা বলছি সেটা কর। এইনে টাকা।এখন জলদি করে যা।

আমি : আচ্ছা যাচ্ছি।

কি আর করার জোর করে আম্মু বাজার করতে পাঠিয়ে দিল।কারণ আম্মুর সাথে আমি পেরে উঠতে পারবো না।তাই বকা না খাওয়ার ভয়ে বাজার করতে চলে গেলাম।তারপর বাজার করে বাসায় এসে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।

দুপুর দিকে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে খাবার খেতে গেলাম। খেয়ে আবার রুমে এসে শুয়ে পরলাম।হটাৎ অনিত্রার ডাকা ডাকিতে উঠে গেলাম।তারপর ফ্রেশ হয়ে গাড়ি নিয়ে এয়ারপর্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

বিকেল ৫ তার দিকে ফ্লাইট ল্যান্ড হলো. অনিত্রা তো অস্থির হয়ে গেছে।কখন তার বাবা মা বেরিয়ে আসবে।তারপর আসতে আসতে সব যাত্রী বের হতে শুরু করলো।তারপর দেখতে পেলাম অনিত্রার বাবা মাও বের হয়ে আসছে।

অনিত্রা দোর দিয়ে গিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল।আর আমি দাড়িয়ে তাদের দিয়ে তাকিয়ে আছি।তারপর তারা আমার সামনে আসলো।

আমি : কেমন আছো মামা।

মামা : আমরা তো ভালই আছি।তুই কেমন আছিস।

আমি : আমিও ভালো আছি।

মামা : আমার বাবাটা দেখি অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।সেই ছোট থাকতে দেখেছিলাম।জানিস তোদের কথা কত মনে পরতো।

আমি : যদি মনে পরতো তাহলে এতদিন আমাদের থেকে দূরে ছিল কেন।আমাদের কাছে চলে আসতে তো পারতে।

মামি : কি আর বলবো বাবা।তোর মামা কাজে এত ব্যাস্ত থাকতো যে বলার মত না।কিন্তুু এখন তো এসে পড়েছি।

আমি : হ্যাঁ।

মামা : এখন এখানে দাড়িয়ে থাকবে নাকি বাসায়ও যাবে।

আমি : হ্যাঁ চল।আম্মু আব্বুও তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

তারপর বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।আমি ড্রাইভ করছি পাসে মামা বসে আছেন।আর পিছনে অনিত্রা আর মামি কথা বলছে।অনেক বছর পর মা মেয়ে একসাথে তাই দুজনে অনেক খুশি আজকে।কথা বলতে বলতে বাসায় এসে পরলাম।

 

 

1,372 Views
Jahid Farahan

Jahid Farahan

আমি ভুল করে কাঁদি ভুলে বাধি ঘর, আমার সমস্ত ভুলের ত, আমিই কারিগর

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments