নামাজে দাড়িয়ে আমরা যা পড়ি!!- তার বাংলা অর্থ

নামাজে আমরা যা বলি , তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা, যখন আমরা বুঝব যে, নামাজে আমরা কি পড়ছি …

1. নামাজে দাড়িয়েই প্রথমে আমরা বলি,

“আল্লাহু আকবার”
অর্থ – আল্লাহ্ মহান!

2. তারপর পড়ি সানা ।

সানায় আমরা আল্লাহর প্রশংসা করি নিজের জন্য দুয়া করি ।

“সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা
ওয়াতাবারাকাস্মুকা ওয়া তা’আলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা”

অর্থঃ হে আল্লাহ ! তুমি পাক-পবিত্র , তোমারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ , তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই ।

3. তারপর আমরা শয়তানের প্রতারনা থেকে আশ্রয় চাই এবং বলি,

“আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির রাজিম”

অর্থ: বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ।

4. আল্লাহর পবিত্র নাম দিয়ে আল্লাহর দয়া করুণার গুন দিয়ে নামাজ এগিয়ে নিয়ে যাই। এবং বলি,

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”

অর্থঃ পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি ।

5. এরপর আমরা সূরা ফাতেহা দিয়ে নামাজ শুরু করি (২ রাকাত/৩ রাকাত/৪ রাকাত , ফরয/সুন্নতের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ পড়ি)

6. আমরা রুকুতে আল্লাহ্ -র উদ্দেশ্যে শরীর অর্ধেক ঝুঁকিয়ে দিয়ে মাথা নুয়িয়ে দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করি এবং ক্ষমা চাই, ৩/৫/৭ বার বলি,

“সুবাহানা রাব্বি-আল আজিম”/ সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম ওয়া বিহামদিহি

অর্থ: আমার মহান রবের পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি ।

7. তারপর রুকু থেকে উঠে আমরা বলি,

“সামি আল্লাহু লিমান হামিদা”

অর্থ : আল্লাহ সেই ব্যক্তির কথা শোনেন, যে তার প্রশংসা করে ।

তারপর পরই আমরা আবার আল্লাহর প্রশংসা করে বলি,

“আল্লাহুম্মা “রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ”

অর্থ : হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা কেবল তোমারই।

8. তারপর আমরা সমস্ত শরীর নুয়িয়ে দিয়ে মাথাকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট সিজদা দেই ।

বি: দ্র: ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে, আল্লাহ তার জন্য একটি নেকী লেখেন ও তার একটি পাপ দূর করে দেন এবং তার মর্যাদার স্তর একটি বৃদ্ধি করে দেন ।

“৩/৫/৭ বার “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা”

অর্থ: আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি ।

9. দুই সিজদার মাঝখানে আমরা বলি, “আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ার হামনী, ওয়াহদীনি, ওয়াজবুরনি, ওয়াআ’ফিনী, ওয়ার-ঝুকনী, ওয়ারফা’নী”

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমায় মাফ কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়েত দান কর, আমাকে শান্তি দান কর এবং আমাকে রিজিক দাও ।

10. এভাবে নামাজ শেষে , মধ্য (২ রাকাত , ৪ রাকাত ভিত্তিতে) বৈঠক আর শেষ বৈঠকে তাশাহুদে, আল্লাহর প্রশংসা করি । রাসুল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পেশ করে নিজেদের জন্য দুয়া করি ।

তাশাহুদ :
“আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্ সালাওয়াতু, ওয়াত্ তাইয়িবাতু। আস্সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু”

অর্থঃ “সকল তাযীম ও সম্মান আল্লাহর জন্য,সকল সালাত আল্লাহর জন্য এবং সকল ভাল কথা ও কর্মও আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপানার প্রতি শান্তি,আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপরে এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল”

দুরুদ :
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও
ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন
কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি
ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ,
আলাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন
কামা বারাক্তা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীমা
ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”

অর্থ:-হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ও উনার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত সম্মানিত ।

দুআ মাসুরা :
“আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি যুলমান কাছিরা, ওয়ালা ইয়াগ ফিরূজ যুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম”

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার উপর অত্যাধিক অন্যায় করেছি গুনাহ করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা একমাত্র তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আমার প্রতি রহম কর। নিশ্চই তুমি ক্ষমাশীল দয়ালু ।

11. ২ কাঁধে সালাম দিয়ে আমরা
নামাজ শেষ করি ।

আল্লাহ নামাজে আমরা কি পড়ি তার অর্থ বোঝার তৌফিক দান করুন। (আমীন)

540 Views
Share this Post :
Jahid Farahan
Jahid Farahan

Life style travel filmmaker.

Articles: 332
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments