রিয়াদ চৌধুরীঃ
১ সপ্তাহ পর মিমকে নিয়ে বাসায় আসলাম।বাসায় এসে মিমকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। হটাৎ তখন কলিং বেলটা বেজে উঠলো।দরজা খুলে দেখি,,,
দরজা খুলে দেখি ৩ জন পুলিশ আর ২ জন লোক দাড়িয়ে আছে।
– জি, আপনারা কারা?(আমি)
– আমরা ইসলামী ব্যাংক থেকে এসেছি।(লোক)
– আমি আপনাদের কি হেল্প করতে পারি।(আমি)
– আপনাদের এই বাড়ি খালি করতে হবে।(লোক)
– খালি করতে হবে মনে?এইটা আমাদের বাড়ি।আমরা কেনো খালি করতে যাবো?(আমি)
– আপনার মা আমাদের ব্যাংক থেকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।কিন্তুু তিনি সেই ঋণ শোধ করতে পারেন নি।তাই আমরা আপনাদের সব সম্পত্তি নিলামে উঠাবো।(লোক)
– (আমারতো এইগুলো শুনে মাথা গুরছে।আম্মু চলে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের উপর এত বড় বিপদ নেমে আসবে চিন্তা করতে পারছি না)(মনে মনে)
– স্যার আমরা আমাদের ১ সপ্তাহের সময় দিলাম।আপনি এই সময়ের মধ্যে বাড়ি খালি করুন।নাহলে আমাদের অন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।(লোক)
এইকথা বলে তারা সবাই চলে গেলো।আর আমি সোফায় বসে পরলাম।কি হচ্ছে এইগুলো আমাদের সাথে।আমার তো মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিছে।এখন কি করবো আমি।যা করার জলদি করতে হবে।কিন্তুু আম্মু এতগুলো টাকা কখন ঋণ নিলো।
_______
মিমের রুমের সামনে গিয়ে দেখি মিম জেগে গেছে।তার পাশে গিয়ে বসলাম,,,
– মিম আমাদের এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।(আমি)
– চলে যেতে হবে মনে।কেনো ভাইয়া?(মিম)
– আম্মু নাকি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল।সেই টাকা পরিশোধ করতে পারেন নি তাই আমাদের সব সম্পত্তি নিলামে উঠবে।(আমি)
– তাহলে এখন আমরা কোথায় যাবি ভাইয়া।(মিম)
– আমি তোকে নিয়ে আবার কানাডা চলে যাবো।কারণ এইখানে আমাদের আর কিছু বাকি নেই।জলদি করে সব কিছু গুছিয়ে নে।(আমি)
– আচ্ছা।(মিম)
________
দেখতে দেখতে নিলামের দিন চলে আসলো।আর সেইদিন আমরাও চলে যাচ্ছি এই দেশ ছেরে।জানা নেই আবার আসা হবে নাকি এই দেশে।শুনেছি আমাদের সব সম্পত্তি নাকি আসিফের বাবা আজমল চৌধুরী কিনে নিয়েছেন।যার কারণে আমার একটু সন্দেহ হলো তার প্রতি।ফ্লাইটে বসে আছি।আর কিছুক্ষণ পর ফ্লাইট টেক অফ করবে।
– ভাইয়া আমাদের সাথে এইসব কেনো হচ্ছে।প্রথমে মা আমাদের ছেরে চলে গেলো।আর এখন আমাদের সব সম্পত্তিও নিলামে উঠে গেলো।(মিম)
– জানি না বোন।আমাদের সাথে এইসব কি হচ্ছে।কিন্তুু তুই চিন্তা করিস না।আমি অনেক জলদি সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবো।(আমি)
– ভাইয়া আমরা কি আর কখনো এইখানে ফিরে আসতে পারবো।(মিম)
– আল্লাহ চাইলে আসতে পারবো।তুই চিন্তা করিস না।(আমি)
কিছুক্ষন পর ফ্লাইট টেক অফ করলো।আবার ফিরে আসলাম সেই চিরও চেনা দেশ কানাডা তে।যেখানে আমার জীবনের ১৫ টি বছর কেটেছে।কিন্তুু অনেক কষ্টও হচ্ছে বাংলাদেশ ছেরে আসায়।
এয়ারপর্ট থেকে ট্যাক্সি নিয়ে আব্বুর বন্ধুর বাসায় চলে গেল।বাসার কলিং বেল চাপ দিতে লিজা এসে দরজা খুলে দিল,,,
– ভাইয়া তুমি,,,,, হোয়াট এ প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ..!(লিজা)
– কেমন আছিস তুই?(আমি)
– আমিতো অল টাইম ভালো থাকি।এইটা তো তোমার সাথে মিম আপু তাই না?(লিজা)
– হ্যা এইটা মিম।এখন কি বাহিরেই দার করিয়ে রাখবি নাকি ভিতরেও আসতে দিবি।(আমি)
– আমার তো খেয়ালই নেই।আসো আসো।(লিজা)
বাসার ভিতরে গিয়ে আণ্টি কিচেন থেকে বের হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
– কেমন আছিস তুই বাবা।এই মাটাকে তো ঐখানে গিয়ে ভুলেই গেছিস।(আণ্টি)
– কিযে বলো না আণ্টি।তোমাকে কি ভুলতে পারি।তোমার জন্যই তো আবার ফিরে আসলাম।(আন্টির কোনো ছেলে নেই তাই আমাকেই নিজের ছেলের মত মনে করে)
– ভালো করেছিস।তুই আবার চলে আসছিস।তোকে ছাড়া আমারও ভালো লাগতো না।(আণ্টি)
– আচ্ছা এই দেখো তো আণ্টি আমি কাকে আমার সাথে নিয়ে আসছি।(আমি)
– আরে এইটা তো আমার মিম মামুনি না।কত বড় হয়ে গেছে।অনেক ছোট থাকতে দেখেছিলাম।তারপর তো আর দেখাই হয় নি।আচ্ছা তুই যা ফ্রেশ হয়ে আয়।আমি তোর জন্য খাবার রেডি করছি।(আণ্টি)
– ঠিক আছে আণ্টি।(আমি)
আমি উপরে চলে গেলাম আমার রুমে।যেখানে আগে আমি থাকতাম।আর মিমকে পাঠিয়ে দিলাম লিজার সাথে।ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেয়ে নিল।তারপর রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম।লং জার্নি করে আসলে পুরো শরীর একদম ক্লান্ত হয়ে যায়।